জাহান খানের নেতৃত্বে ১১১ সুপারিশ বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে টাস্কফোর্স গঠন
নিজস্ব প্রতিবেদক:সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের নেতৃত্বে গঠিত হওয়া জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল তাদের ১১১ দফা সুপারিশ করেছে। এ সুপারিশ বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে প্রধান করে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বনানীতে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেন কাউন্সিলের সদস্যরা।
সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রধান করে টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সভায় সর্বসম্মতিক্রমে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ওই ১১১ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে প্রধান করে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলামকে টাস্কফোর্সের সদস্য সচিব নির্বাচিত করা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, পুলিশের আইজিপি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, ডিএমপি কমিশনার, উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী, বিআরটিএ ও বিআরটিসির প্রধান প্রকৌশলী এবং চেয়ারম্যান, ডিটিসিএ-এর নির্বাহী পরিচালক, পরিবহন মালিক সমিতির প্রতিনিধি, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের প্রতিনিধি, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির প্রতিনিধি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রতিনিধি, মো. সামসুল হক, সৈয়দ আবুল মকসুদ, ইলিয়াস কাঞ্চন ও হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি গঠিত এ টাস্কফোর্সের সদস্য হবেন।
এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, সড়ক পরিবহন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার পর তাদের দাবি অনুযায়ী করণীয়গুলো সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সড়ক পরিবহনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বসে এ নিয়ে আরও আলোচনার করবো। এ সময় আগামী সপ্তাহের মধ্যে এর কার্যক্রম শুরু করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
বৈঠকে সড়কের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ১১১ সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) সংযোজন করতে হবে। স্কুল-কলেজ বিশেষ করে ভিকারুন্নেসা, স্কলাস্টিকার মতো স্কুলগুলোতেও পার্কিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। এছাড়া যত্রতত্র গড়ে উঠছে পার্টি সেন্টার, সেখানেও রাখা হয় না পর্যাপ্ত পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে আইজিপি বলেন, পার্কিংয়ের জায়গা ছাড়া যেন কোনো স্থাপনা করার অনুমোদন না দেয়া হয়। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। যার কোনো বিকল্প নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া জানান, সড়কে শৃঙ্খলার প্রথম সমস্যা হলো নিয়ম না মেনে চলার সংস্কৃতি। এ কারণে, প্রতিবছর ৬০ কোটি টাকার মতো জরিমানা আদায় হয়। পুলিশ সেবাখাত থেকে বর্তমানে রাজস্ব খাতের দিকে যাচ্ছে। নিয়ম না মেনে চলায় বার বার জরিমানা করার পরও নিয়ম মানছে না অনেকেই। এমনকি দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাও উল্টোপথে যেতে কোনো প্রকার দ্বিধাবোধ করেন না।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাংসদ একাব্বর হোসেন, জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভাপতি ও সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা, বিআরটিএর চেয়ারম্যান মশিউর রহমানসহ জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের অন্যান্য সদস্যরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।