www.comillabd.com কুমিল্লাবিডি ডট কম

সত্য সন্ধানে আপোসহীন

আন্তর্জাতিকরাজনীতি

বেগম জিয়ার মুক্তি নিয়ে সরকার তামাশা করছেঃ রিজভী

কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে সরকার তামাশা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বক্তব্য এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বক্তব্য বিপরীতধর্মী। এতেই বোঝা যায় খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসা নিয়ে সরকার নিষ্ঠুর তামাশা করছে।

সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

খালেদার চিকিৎসা ও জামিনে বাধা দেয়ার পেছনে সরকারের ভয়ঙ্কর নীলকশা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট হতে শুরু করেছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন দেশনেত্রীকে হয় দুনিয়া থেকে না হয় রাজনীতি থেকে সরিয়ে দিতে। গত কয়েকদিন ধরে সরকারদলীয় লোকদের মিডিয়া এবং মন্ত্রী ও তাদের নেতাদের কথাবার্তায় মনে হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়ার প্যারোল নিয়ে তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।’

‘আমরা দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই- নিঃশর্তভাবে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। তাকে সাজানো মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে এক বছরের বেশি সময় কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। জামিন পাওয়া তার নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার। যে মিথ্যা মামলায় তাকে জোর করে সাজা দেয়া হয়েছে, সেই মামলায় অন্যান্য সবাই জামিনে রয়েছেন। অথচ আদালতের ওপর প্রভাব খাটিয়ে শুধু দেশনেত্রীকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। নতুন নতুন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেয়া হচ্ছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, মামলা কিছু নয়, আসল উদ্দেশ্য দেশনেত্রীকে তিলে তিলে শেষ করা অথবা সারাজীবনের জন্য রাজনীতির ময়দান থেকে সরিয়ে দেয়া। সেই উদ্দেশ্য সফল না হওয়া পর্যন্ত তাকে বন্দি করে রাখা। আওয়ামী লীগের মন্ত্রী থেকে শুরু করে তাদের প্রিয়ভাজন ব্যক্তিরা একই ধরনের মামলায় জামিনে আছেন।

বঙ্গবন্ধু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি নেত্রীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘পিজি হাসপাতালে তার চিকিৎসার যথাযথ ব্যবস্থা নেই। ডাক্তারদের দিয়ে গঠিত বোর্ড তার রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় কোনো অগ্রগতি নেই। তারাও স্বীকার করছেন দেশনেত্রীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসছে না। আমরা জেনেছি, তিনি একেবারেই হাঁটাচলা করতে পারছেন না। ডায়াবেটিস, জটিল অন্যান্য রোগ ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বেগম খালেদা জিয়া এখন গুরুতর অসুস্থ। সরকার তার বড় ধরণের কোনো ক্ষতি করার জন্য সময়ক্ষেপণ করছে কি না এ নিয়ে জনমণে প্রশ্ন গভীরতর হচ্ছে। তবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার ক্ষতিকর কিছু হলে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।’

তিনি বলেন, মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দেয়ার বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল যে বক্তব্য দিয়েছেন, যদি তাই হয় তবে তিনি বারবার মিথ্যা মামলায় বেগম জিয়ার জামিন পেতে বাধা দিচ্ছেন কেন? দেশনেত্রী বেগম জিয়ার জামিনে মুক্তি পেতে সরকারের নির্দেশই সবচাইতে বড় বাধা হিসেবে কাজ করছে।

সরকারের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, এক মাঘে শীত যায় না। পরিস্থিতি সব সময় একই রকম থাকে না। নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভাবুন, পরিস্থিতি বদলাতে সময় লাগে না। মানুষের আওয়াজ শুনুন। ফুঁসছে মানুষ। পায়ে পা, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রস্তুত হচ্ছে তারা। তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র বন্ধ করে দ্রুত দেশনেত্রী জনগণের আস্থার প্রতীক বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিতে আর বাধা দিবেন না। গণমানুষের নেত্রীকে তাদের মাঝে ফিরতে দিন।

বিএনপির কারো বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলাও করা হয়নি বলে সম্প্রতি গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় বলেন প্রধানমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করেন বিএনপি নেতা রিজভী। বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর একথাটি শুনে একটি প্রবাদ মনে পড়ে যায়-অল্পশোকে কাতর আর অধিক শোকে পাথর। তার এই পর্বতসমান মিথ্যা বক্তব্যে দেশের মানুষ পাথর হয়ে গেছে।’

‘আপনারা জানেন, বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সারাদেশে ১ লাখের বেশি মিথ্যা মামলায় আসামি ২৫ লাখেরও বেশি। এর মধ্যে ২৫ হাজার গায়েবি মামলা।’

সংবাদ সম্মেলনে দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূইয়া, শাহিদা রফিক, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

error: Content is protected !!