দুর্নীতি দমনের বিকল্প নাই : জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : ‘দুর্নীতি দমন করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অন্যতম অঙ্গীকার। ইতোমধ্যে তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। এবার আমরাও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সেই নীতির বাস্তবায়ন চাচ্ছি। সেক্ষেত্রে গণতন্ত্রের ভীত মজবুত করতে হলে দুর্নীতি দমনের কোনো বিকল্প নেই।’
মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজের প্রথম কার্যদিবসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নবনিযুক্ত জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রশাসনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। আমার ধারণা, একাদশ জাতীয় সংসদ এ ব্যাপারে ভালো পদক্ষেপ নেবে। ইতোমধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন অত্যন্ত শক্তিশালী হয়েছে, আগামীতে আরো শক্তিশালী হবে। সেক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে পারবে। আমাদের কাজে যদি কোনো অন্তরায় বা বাধা বা ত্রুটি থাকে তাহলে প্রথমে সেগুলো দূর করা হবে। আপনারা আমাদের সামনে তুলে ধরলে আমরা দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সমাধান করব।
তিনি বলেন, জনপ্রশাসনে অনেক স্মার্ট ও নলেজেবল অফিসার আছে। ভালো ব্যুরোক্রেসি ছাড়া উন্নত দেশ সম্ভব না। প্রধানমন্ত্রী সুনিপুণভাবে চিন্তা করছেন, যাতে আমরা একটা ভালো, দক্ষ প্রশাসন গড়ে তুলতে পারি। অবশ্যই আপনারা ভালো কিছু দেখবেন।
গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রণালয় কতটা শক্তভাবে সামলাতে পারবেন, জানতে চাওয়া হলে ফরহাদ হোসেন বলেন, আমার মাথার ওপর আছেন প্রধানমন্ত্রী। আশা করি, তার দিকনির্দেশনায় সব বিষয়েই আমরা সুন্দরভাবে করতে পারব। এখানে কোনো সমস্যা হবে বলে আমি মনে করি না।
মন্ত্রীদের সম্পদের হিসাব প্রকাশ করা উচিত কি না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই আছে। গণতন্ত্রে জবাবদিহিতার একটা ব্যাপার আছে। সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের তো জবাবদিহিতার মধ্যে থাকতেই হবে।
প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের বৈষম্য দূর করার প্রসঙ্গে ফরহাদ হোসেন বলেন, আমি দশম সংসদের একজন সংসদ সদস্য ছিলাম। আমার এলাকা থেকে যারা ক্যাডার সার্ভিসে আছেন তারা আমার কাছেও অভিযোগ-অনুযোগ করেছিলেন যে, আমি যাতে আমি এ বিষয়ে সংসদে অবদান রাখি। সেক্ষেত্রে বিষয়গুলো নিয়ে আমিও অবহিত আছি। এ বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কিন্তু অনেকগুলো সলিউশন ইতোমধ্যে দিয়েছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছে। বাকিটা আমরা করতে পারব।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতির বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু ঘোষণা দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব এটা করা হবে। যখন এটা ঘোষণা করা হয়েছে, এর মানে অনেক চিন্তা-ভাবনা করেই ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যেটা বলেন, সেটা করেন। আমরাও চাই, যাতে এটা খুব দ্রুত হয়।
তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই দেশটিকে যাতে আরো উন্নত দেশে পরিণত করা যায়, সেভাবে সবদিক থেকেই সাজাচ্ছেন। প্রশাসনকেও তিনি অত্যন্ত নিবিড়ভাবে, সতর্কতার সঙ্গে একটা লক্ষ্য সামনে রেখে তিনি সাজাচ্ছেন, সেটি হচ্ছে আমাদের জনপ্রশাসন হবে জনবান্ধব প্রশাসন।
সদ্য প্রয়াত জনপ্রশাসনমন্ত্রীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের অত্যন্ত ভালোবাসার মানুষ, জনপ্রিয় নেতা প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি প্রয়াত হয়েছেন, তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি। এই মন্ত্রণালয়ে তিনি যথেষ্ট অবদান রেখে গেছেন। তার শূন্যস্থান পুরণ করা সম্ভব নয়।
আপনার কাজ কী হবে, এমন প্র্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছেন, যে নির্দেশনা দেবেন, সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করাটাই প্রতিমন্ত্রী হিসেবে আমার কাজ। এই মন্ত্রণালয়ের পূর্ণ মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নিজেই। প্রধানমন্ত্রী চান, আমাদের এই প্রশাসন অত্যন্ত দক্ষ, গতিশীল ও জনবান্ধব হবে, যাতে গ্রামের সাধারণ মানুষ পর্যন্ত জনপ্রশাসনের সমস্ত সেবাগুলো অত্যন্ত সহজ-সাবলীলভাবে পেতে পারে। সেজন্য আগামী দিনের কর্মপরিকল্পনা আছে, সেটা সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করব।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সচিবালয়ে আসেন নতুন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ফুল দিয়ে তাকে বরণ করে নেন। এ সময় জনপ্রশাসন সচিব ফয়েজ আহমেদসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।