কুমিল্লার নাঙ্গলকোট প্রেসক্লাবের সাংবাদিকদের আনন্দ ভ্রমণ
কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার সাংবাদিকরা চারদিকে নানা খবরের পিছনে দৌড়াতে দৌড়াতে ক্লান্ত মনকে একটু প্রশান্তি দিতে ভাদ্র মাসের শরতের প্রকৃতি দেখতে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করেন প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা।
শনিবার দুপুরে ১টায় নাঙ্গলকোট প্রেসক্লাব থেকে যাত্রা শুরু হয়ে উপজেলার ঢালুয়া, বক্সগঞ্জ বাজার হয়ে সাতবাড়িয়া ইউপির ডাকাতিয়া নদীর পাড় গেসা সাতবাড়িয়া বিল। সেখানে গিয়ে পৌঁছলে সূর্য তখন মাথা ওপর থেকে হেলে পশ্চিম আকাশে। ছায়া পড়েছে পূর্ব দিকে। বিলে বুক ছিড়ে বয়ে গেছে একটি সড়ক। সড়কের দুপাশে বিলেতে পানি থইথই। তার মাঝে রং বেরংগের পদ্ম ফুলের সমাহার। এ দৃশ্য দেখে কার না ভালো লাগে।
ভাদ্র মাস মানেই শরতকাল। শরত মানেই ‘ঋতুর রাণী’। সবুজ-শ্যামল শরতের প্রকৃতির এ দৃশ্য দেখে মনে পড়িয়ে দেয় ‘মেঘের কোলে রোদ হেসেছে, বাদল গেছে টুটি/ আহা, হাহা, হা… আজ আমাদের ছুটি ও ভাই, আজ আমাদের ছুটি’—কবিতার এই চরণ দুটি।’ যা সম্ভাবনাময়ী একটি পর্যটন কেন্দ্র। প্রতিদিন শত শত লোক মনকে একটু শান্তি দিতে এখানে এসে নৌকায় চড়ে ।
পরে সেখান থেকে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে আকাঁ বাঁকা পাঁকা সড়ক ধরে চৌকুড়ি বাজার হয়ে গুণবতী ব্রিজ পৌঁছি। তখন পশ্চিম আকাশে সূর্য গাড় লাল দেখায়। যা ঢাকা চট্টগ্রাম রেল পথে হাসানপুর-গুণবতী রেল স্টেশনের মধ্যবর্তী স্থানে ডাকাতিয়া নদীর বুক ছিড়ে বয়ে গেছে একটি ব্রিজ। যা ঐতিহ্যবাহী গুণবতী ব্রিজ নামে পরিচিত। মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে র্বমান পর্যন্ত কালের অনেক স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে এ ব্রিজ। ডাবল রেললাইন হওয়াতে এ ব্রিজটিকে আরো দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তুলছেন বর্তমান সরকার। ব্রিজটি দেখে মনে করিয়ে দেয় ‘কেয়া-পাতার নৌকো গড়ে সাজিয়ে দেব ফুলে/ তাল-দিঘিতে ভাসিয়ে দেব চলবে দুলে দুলে…।’ যা দেখার জন্য নাঙ্গলকোট-চৌদ্দগ্রাম উপজেলা থেকে প্রতিদিন শত শত লোক আসে এখানা। যা সম্ভাবনাময়ী আরেকটি পর্যটন কেন্দ্র ।
পরে সেখান থেকে রেললাইনের পাশে পাঁকা সড়ক ধরে চিলপাড়া ব্রিজ গিয়ে পৌঁছাই। তখন পশ্চিম আকাশে সূর্য নিবু নিবু। লাকসাম-চিওড়া সড়কের নাঙ্গলকোট উপজেলার ঢালুয়া ইউপির ডাকাতিয়া নদীর বুক ছিড়ে বয়ে গেছে চিলপাড়া ব্রিজ। ব্রিজ গেসা পুটিজলা নৌকায় ভ্রমণ অনেক আনন্দদায়ক। যে কেউ গেলেই নৌকা ছড়ে আসেন না। এমন লোক কমেই আছে। সড়কে পাশে মালাই চায়ের দোকান, কাবাব হাউজ সহ ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। বিলে নৌকায় চড়ে দেখা যায় রং বেরঙের পদ্ম ফুলের সমাহার। ভাদ্রে ভ্রমণে গিয়ে নয়নলোভা দৃশ্য দেখে স্মরণে আসবে—‘ আমি চেয়েছিনু দুটি ফুল দাও আমারে/ তুমি চেয়েছিলে মোর পানে ক্ষণিক হেসে…/ কাছে এসে কথা কয়েছিলে কত না ছলে…’ গানের এই চরণগুলো। কবি অনিল ভট্টাচার্য আর শিল্পী সত্য চৌধুরী গান ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- প্রেসক্লাব সভাপতি মজিবুর রহমান মোল্লা, সহ-সভাপতি নিজাম উদ্দিন শাহীন, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক কামাল হোসেন জনি, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল মাহমুদ বাহার, অর্থ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সাহিত্য সম্পাদক মো. দুলাল মিয়া, অফিস সম্পাদক মেহেদী হাসান ভূইয়া আজিম, ওমর ফারুক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, শরীফ আহমেদ মজুমদার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, সদস্য রেজাউল করিম রাজু, শাহজাহান, তোফায়েল হোসেন মজুমদার ও জহিরুল ইসলাম প্রমুখ ।